নাইম আইটি https://www.nayemit.com/2022/01/dropshipping.html

ড্রপ শিপিং কি? Dropshipping করে টাকা ইনকাম ২০২২

আজকে আমরা ড্রপ শিপিং বিজনেস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। ড্রপ শিপিং ব্যবসা নিয়ে আপনাদের অনেকেরই জানার আগ্রহ রয়েছে। আজকে আমরা যে যে বিষয়ের উপর আলোচনা করবো তা হলোঃ 
what is dropshipping

ড্রপ শিপিং কি? 

পাইকারি বিক্রেতার কাছ থেকে কোন পণ্য কিনে সরাসরি আপনি/ আপনার মাধ্যমে কাস্টমারের কাছে উক্ত পণ্য পৌঁছে দেওয়াকে ড্রপ শিপিং বলে। ড্রপ শিপিংয়ের মাধ্যমে কোন পণ্য আপনার স্টকে না রেখেই পণ্য বিক্রি করা যায়। ব্যাপারটা হয়তো আপনাদের অনেকের অবাক লাগছে। তবে আমাদের পুরো পোস্ট পড়লে আশা করি ড্রপশিপিং এর সবকিছু বুঝতে পারবেন।

মনে করুন আপনি একজন ডিজিটাল মার্কেটার (যদিও ডিজিটাল মার্কেটিং অনেক বড় একটি ব্যাপার হতে পারে আপনি এসইও এক্সপার্ট বা ফেসবুক এডস এক্সপার্ট ইত্যাদি)। আপনার পরিচিত একটি লাইব্রেরী আছে যারা বই বিক্রি করে। আর বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে অনলাইনে বই বিক্রি হয় প্রচুর। কিন্তু সমস্যা হলো লাইব্রেরী বিক্রেতা ডিজিটাল মার্কেটার না। ফলে আপনি আপনার মার্কেটিং নলেজকে কাজে লাগিয়ে তার বই বিক্রি করে দিবেন। আপনি ফেসবুকের মাধ্যমে কাজটি করতে পারেন আবার আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও কাজটি করতে পারেন। এখানে বলে রাখা ভালো কাস্টমার জানবে বইগুলো সে আপনার থেকেই নিচ্ছে এবং এটি আপনার নিজস্ব মালিকানাধীন ব্যবসা। কিন্তু আপনি লাইব্রেরী বিক্রেতাকে অর্ডার দেওয়ার সময় কাস্টমারের সকল তথ্য দিবেন ফলে বিক্রেতা তার ঠিকানায় বই পাঠিয়ে দিবেন। 

ড্রপ শিপিং ব্যবসা কিভাবে করবেন?

বর্তমানে ড্রপ শিপিং ব্যবসা এর জন্য আলি এক্সপ্রেস পুরো পৃথিবীতে বেশ জনপ্রিয়। তবে আপনাকে আলি এক্সপ্রেসের মাধ্যমেই ড্রপ শিপিং করতে হবে বিষয়টি এমন না। আপনি চাইলে স্থানীয় কোন দোকানদারের মাধ্যমেও আপনার ড্রপশিপিং বিজনেস পরিচালনা করতে পারবেন। তবে আগে থেকেই আপনাকে কিছু বিষয় ক্লিয়ার রাখতে হবে। আপনি যে পণ্য বিক্রি করবেন এটার মূল কাস্টমার কারা? পণ্যটি আপনি কোন উপায়ে কাস্টমারদের কাছে পৌঁছায় দিবেন? সারা বছর এটির চাহিদা থাকে কিনা? পাইকারি বিক্রেতা সময়মত পণ্য ডেলিভারি দিতে পারবেন কিনা ইত্যাদি বিষয় খুব ভালোভাবে জেনে নিয়ে কাজ করতে হবে। কারণ আপনি যদি কাস্টমারের থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে দেরিতে পণ্য সরবারাহ করেন সেক্ষেত্রে কাস্টমার ধরে রাখা আপনার জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। 

এখানে আপনাদের মনে আরেকটি বিষয় আসতে পারে আপনি যে পণ্য বিক্রি করবেন কিন্তু টাকা কিভাবে নিবেন? কারণ বিকাশ, নগদ বা রকেটে পার্সোনাল একাউন্টে টাকা পাঠাতে অনেকেই নিরাপদ মনে করে না। তাছাড়া পণ্য ডেলিভারিতে বেশি সময় নিলে কেউ বিকাশের লাইভ চ্যাটে আপনার নামে কমপ্লেইন করলে ঝামেলায় পড়বেন। ফলে আপনার উচিত হবে একটি পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করা অথবা বিকাশ পার্সোনাল রিটেইলার একাউন্ট খুলে ফেলা। যদি বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে চান তবে আপনার ট্রেড লাইসেন্সের প্রয়োজন পড়বে। কিন্তু রিটেইলার একাউন্টে এগুলোর প্রয়োজন হয় না তবে আপনার এড্রেস ভেরিফাই করার জন্য তারা পিন কোড চিঠি আকারে আপনার কাছে পাঠাবে। এটির মাধ্যমে আপনি ভিন্ন ভিন্ন প্রোডাক্টের জন্য আলাদা আলাদা লিংক জেনারেট করে পেমেন্ট নিতে পারবেন। 

কিভাবে ড্রপশিপিং বিজনেস করবেন?

উপরের প্রক্রিয়াটি হয়তো আপনাদের কাছে জটিল লাগতে পারে। তবে এর থেকে বড় বিষয় হলো আপনি পণ্যটি সেল করবেন কিভাবে? এটির জন্য আপনার ফেসবুক পেজ, গ্রুপ, ইস্টাগ্রাম বিজনেস পেজ কিংবা একটি ওয়েবসাইট থাকতে হবে। আমরা potentialit.xyz এর মাধ্যমে আমাদের একটি ড্রপ শিপিং ওয়েবসাইট খুব অল্প মুল্যে বানিয়েছিলাম। বর্তমানে তারা মূলত কনটেন্ট, এসইও আর এডসেন্স রিলেটেড সার্ভিস দিয়ে থাকে তবে ড্রপশিপিং ওয়েবসাইট সার্ভিস দিলে তাদের থেকে সল্পমুল্যে নিতে পারবেন। 

এবার আপনার ৮০% কাজ শেষ। এখন আপনার নিজের একটি প্লাটফর্ম, পেমেন্ট গেটওয়ে সব আছে। এখন শুধু প্রোডাক্ট যুক্ত করে মার্কেটিং করবেন। ব্যস এভাবে বছরে আপনি লক্ষাধিক টাকা লাভ করতে পারবেন। অনেকে বলতে পারেন মূল বিক্রেতার থেকে না কিনে আমার থেকে কিনবে কেন? আমরা আগেই উত্তর দিয়েছি মূল বিক্রেতা ডিজিটাল মার্কেটার না ফলে আপনি নিজের নলেজ কাজে লাগিয়ে তার প্রোডাক্ট সেল করে দিচ্ছেন। Dropshipping বর্তমানে বিলিয়ন ডলারের একটি বিজনেস। 

কেন Drop shipping বিজনেস করবেন?

Drop Shipping Business এর প্রধান সুবিধা হলো এখানে আপনার পণ্যের জন্য কোন ইনভেস্ট করার প্রয়োজন নেই। হ্যাঁ তবে আপনার ফেসবুক পেজ, গ্রুপ কিংবা আপনার ওয়েবসাইট খোলার জন্য ন্যূনতম কিছু ইনভেস্ট করা লাগবে। তবে চিন্তা করে দেখুন আপনি যদি নিজে একটি ই-কমার্স প্লাটফর্ম তৈরি করেন বা একটি দোকান দেন তাহলে আপনার কয়েক লাখ টাকা ইনভেস্ট করার প্রয়োজন পড়বে। অন্যদিকে ড্রপশিপিংয়ের মাধ্যমে আপনি অল্প পূঁজিতে লক্ষাধিক টাকা আয় করতে পারবেন। 

তাছাড়া ড্রপ শিপিং ব্যবসা এর অনেকগুলো সুবিধা রয়েছে। ইতোমধ্যে আপনাদের বিষয়টি বুঝার কথা কিন্তু তারপরেও আমরা নিচে বিস্তারিত শেয়ার করলাম। 

১. এই বিজনেস করতে আপনার কোন দোকানের বা স্থায়ী কোন জায়গার প্রয়োজন নেই। আপনি নিজের বাসায় বসেই কাজ করতে পারবেন। 
২. ড্রপ শিপিং বিজনেসের জন্য কোন ট্রেড লাইসেন্স এর প্রয়োজন নেই। কিন্তু অন্যান্য ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্সের প্রয়োজন রয়েছে। 
৩. এখানে আপনার কোন জনবল নিয়োগের প্রয়োজন পড়বে না। ফলে কর্মীদের পিছনে যে টাকা খরচ হয় সেটি আর হচ্ছে না। 
৪. পণ্য ডেলিভারি করা নিয়ে আপনার কোন ঝামেলায় পড়তে হবে না। কারণ কোন ডেলিভারি করার দায়িত্ব পাইকারি বিক্রেতার। 
৫. ড্রপ শিপিং ব্যবসায় কোন লস নেই বরং এখানে শুধু লাভ আর লাভ। কাজেই আপনার নিশ্চিন্তে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। 

ড্রপশিপিং শিপিং ব্যবসা করতে কি কি লাগে?

আমরা আগেই বলেছি ড্রপশিপিং বিজনেস করতে খুব কম ইনভেস্টমেন্টের প্রয়োজন হয়। এখানে আমরা যে পদ্ধতি শেয়ার করব সেগুলো অনুসরণ করলে আপনি সব থেকে কম খরচে dropshipping business দাঁড় করাতে পারবেন। ড্রপ শিপিং ব্যবসা শুরু করতে যা যা লাগবেঃ
  • একটি ওয়েবসাইট
  • একটি ফেসবুক পেজ
  • ইনস্টাগ্রাম বিজনেস একাউন্ট 
  • ইউটিউব চ্যানেল (ঐচ্ছিক)
  • ফেসবুক গ্রুপ (ঐচ্ছিক)
  • ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স ইত্যাদি। 
ফেসবুক পেজ তৈরি করে আপনি প্রোডাক্ট লিস্টিং করতে পারবেন, প্রডাক্ট বুস্ট করার মাধ্যমে সেল বৃদ্ধি করতে পারবেন এবং সরাসরি কাস্টমারের ইনবক্সে পণ্যের যেকোনো বিশেষ ছাড় বা ক্যাম্পেইন সম্পর্কে জানাতে পারবেন। 

আপনার নিজস্ব একটি ওয়েবসাইট থাকলে এটি সবথেকে ভালো একটি উপায় কোন টাকা খরচ না করেই সেল করা। তবে এটা করার জন্য আপনার সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে। আপনি শুনে অবাক হবেন যে অনেক ওয়েবসাইট বিজ্ঞাপনের পিছনে টাকা খরচ না করে শুধুমাত্র এসইও দ্বারা মাসে প্রচুর পরিমাণে সেল জেনারেট করে থাকে। 
ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইট বাদে অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। আপনি যদি একজন জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর হন সেক্ষেত্রে আপনার জন্য যেকোনো প্লাটফর্ম ব্যবহার করাই সুবিধাজনক। তবে মনে রাখবেন যে প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে আপনার কোন আইডিয়া নেই বা আপনি ভালোভাবে পরিচালনা করতে পারেন না তাহলে সেটি এড়িয়ে চলাই ভালো। আশা করি বুঝাতে পেরেছি। 

ড্রপশিপিং ব্যবসা করে ইনকাম করার উপায়

Dropshiping service দিয়ে থাকে এমন কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে আগে কথা বলে নিবেন। আপনি যদি ১০০% নিরাপদ ও বেশি কমিশনের  কোন সাইট খুঁজে থাকেন আলি এক্সপ্রেস আপনার জন্য সেরা অপশন। এটি ড্রপশিপিংয়ের জন্য পুরো বিশ্ব জুড়ে বহুল ব্যবহৃত একটি ওয়েবসাইট। 

তবে আপনি চাইলে বড় কোন সাইটের সহায়তা না নিয়ে ছোট সাইটগুলোতে বা পেজে কথা বলে বিষয়টা বলতে পারেন। তাদেরকে বলবেন যে আপনি তাদের প্রোডাক্ট সেল করে দিবেন এবং তারা যেন আপনার কাছে বাজার মূল্যের চেরে কম দাম রাখে।

শেয়ার করলে মিষ্টি পাবেন

0 জন কমেন্ট করেছেন

Please read our Comment Policy before commenting. ??

পটেনশিয়াল আইটি কী?